রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
চান মিয়া, বিশেষ সংবাদদাতা (সুনামগঞ্জ): ছাতকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নৌকা ডুবিতে মৃত্যুবরণকারি দু’বোনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় দু’শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধলক্ষাধিক শিশু শিক্ষার্থী। রোববার ময়নাতদন্ত শেষে এদেরকে ছৈলা-আফজালাবাদ ইউপির কহল্লা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দু’বোনের মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জানা যায়, শনিবার বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বন্যার পানিতে নৌকা যোগে কহল্লা গ্রামের নিজ বাড়িতে ফেরার পথে নৌকা ডুবিতে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছে দিলাল মিয়ার মেয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী লিজা (১১) ও ২য় শ্রেণির ছাত্রী নিলুফা (৮)। এ সময় প্রতিদিনের ন্যায় দেড় কিলোমিটার হাওর পাড়ি দিয়ে ছোট কাঠবডির নৌকায় বাড়ি ফিরছিল। একই নৌকার যাত্রি ছিল তাদের প্রতিবেশি ৫ম শ্রেণির ছাত্রী আলেয়া (১১) ও রুকশানা (১১)। ঘটনার সময় তারা প্রাণে বেঁচে গেলেও বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় লিজা ও নিলুফা। ২য় শ্রেণিতে পড়–য়া নিলুফার দুপুরে ছুটির পর বড়বোন লিজার সাথে নৌকায় বাড়ি ফিরতে স্কুলের বারান্দায় বসে থাকে। বিকেলে ৫ম শ্রেণির ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকের কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, দিলাল মিয়ার ৪ মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দু’জন মৃত্যুবরণ করেছে। মা নীপা বেগম লিজা ও নিলুফার মৃত্যু শোকে এখন কাতর। ঘটনার পর উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে পড়েছে। অনেকে দাবি করছেন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গত ৯ আগস্ট থেকে উপজেলা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এরপরও প্রায় দু’শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। ফলে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক শিশু শিক্ষার্থী। বাংলাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চদা) রাহিমা বেগম জানান, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ জানান, রাত সাড়ে ১০টায় নিহত দু’বোনের লাশ দাফন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবারের সহায়তা দানের আশ্বাস দেন তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এখনো এক কিলোমিটার পাঁেয় হেটে ও আরো দেড় কিলোমিটার নৌকা যোগে কহল্লা গ্রামের শিক্ষার্থীরা বাংলাবাজার স্কুলে গিয়ে পড়েন। এখন কহল্লা গ্রামে একটি নতুন স্কুল হচ্ছে বলে জানিয়ে বলেন, গ্রামটি মনে হয় উপজেলার মধ্যে তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি অবহেলিতই রয়ে গেছে।